রিয়াদুন্নবী রিয়াদ নিজস্ব প্রতিবেদক:

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় গৃহবধূ নিশি আক্তারকে এসিডে ঝলসে হত্যার অভিযোগে আত্মগোপনে থাকা স্বামী রুবেল মিয়াকে (৩৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাতে গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি আল এমরানের নির্দেশনায় এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রংপুর লালবাগ খামারমোর এলাকায় অভিযান চালিয়ে রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন এসআই উত্তম কুমার।

রবিবার সকালে রুবেলকে আদালতে উপস্থাপন করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। এ মামলায় অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই উত্তম কুমার।২৫ ডিসেম্বর রাতে পারিবারিক কলহের জেরে গঙ্গাচড়ার দক্ষিণ চেংমারী গ্রামে গৃহবধূ নিশি আক্তার তার স্বামী রুবেলের হাতে এসিডে ঝলসে যান। তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরবর্তীতে ঢাকায় চিকিৎসা দেওয়া হয়।

অবস্থার অবনতি হলে তিনি আবার রংপুরে ফিরেন। ৬ জানুয়ারি সোমবার রাতে তিনি মারা যান।পুলিশ নিশির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। সুরতহাল রিপোর্টে দেখা গেছে, তার শরীরের প্রায় পুরোটা অংশ দগ্ধ।প্রতিবেশীদের মতে, রুবেল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে নিশির ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। এমনকি তাকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। প্রতিবাদ করায় একাধিকবার নিশি তার বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন।

তবে রুবেল সেখানে গিয়ে হামলা ও ভাঙচুর করতেন।৬ জানুয়ারি নিশির মৃত্যুর পর রুবেল তার মোটরসাইকেল পুড়িয়ে ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রতিবেশীরা এ বিষয়ে স্পষ্ট অভিযোগ তুলে ধরেন।নিশির মা আমেনা বেগম বলেন, "আমার মেয়েকে রুবেল পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।" নিশির বাবা মোহাম্মদ আলী বলেন, "বিয়ের পর থেকেই রুবেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল আমার মেয়ে। শুধু মেয়েকেই নয়, আমাদের পুরো পরিবারকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে সে।"পুলিশ জানিয়েছে, রুবেল মিয়ার বিরুদ্ধে জাল টাকা ও মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে।

তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা বিচারাধীন। নিশি হত্যার ঘটনায় ৬ জানুয়ারি গঙ্গাচড়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিশির মা।গঙ্গাচড়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক ( তদন্ত) জানিয়েছেন, প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।