প্রতি বছর মার্চ ও এপ্রিল ২ মাস হিজলা উপজেলা ও এর আশপাশের প্রায় ৮২ কিলোমিটার নদীকে মৎস্য সম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে অভয়াশ্রম ঘোষণা করে মৎস্য অধিদপ্তর।
হিজলা উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের গঙ্গাপুর, আশুলিয়া আবুপুর, আবুপুর, ভাঙ্গা, সুলতান পুর, কলারগাও, বদরপুর, কৃষ্ণপুর, সাতপাড়া ও এর আশপাশের কিছু নদীতে নিয়মিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর পতাকা সাদৃশ্য পতাকা ব্যবহার করে অভয়াশ্রমে মাছ শিকার করছে জেলেরা, এমন অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার (১২ই এপ্রিল ) দুপুর ২টায় এই অঞ্চলের নদীগুলো ঘুরে দেখা গেছে বিএনপি নেতাদের আশ্রয়ে অভয়াশ্রমে মাছ শিকারের বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেলেও দলীয় পতাকা সাদৃশ্য পতাকার ব্যবহার পাওয়া যায়নি। তবে আংশিক সাদৃশ্য রয়েছে জেলেদের মাছ শিকার করা নৌকা ও ট্রলারে ব্যবহৃত পতাকাটিতে ।
বিএনপির দলীয় পতাকায় উপরে লাল ও নিচের অংশ সবুজ, মাঝখানে ধানের শীষের একটি লোগো। জেলেদের মাছ শিকার করার ট্রলারে ব্যবহৃত পতাকায় উপরে লাল তারপরে সবুজ হলেও নিচে ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নাম্বার সংবলিত হলুদ কাপড় লাগানো রয়েছে যার দুর থেকে লাল এবং সবুজ অংশটাই বেশি চোখে পরে,তাই কেউ কেউ বিএনপির পতাকা সাদৃশ্য পতাকা হিসেবে দাবী করতে পারেন, এছাড়াও পতাকাটির মালিক একজন বিএনপি নেতা হওয়াতে কেউ কেউ এটাকে বিএনপির পতাকা বলেন, দাবী করেন স্থানীয় কয়েকজন যুবদলের কর্মী।
তবে মাছ শিকার করা জেলে নৌকা ও ট্রলারগুলোতে যেসব জাল দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে এসব জাল সরকার কতৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত। দেশের আইন অনুযায়ী ১২ মাস নিষিদ্ধ জাল( কোনা জাল, বেড় জাল, কারেন্ট জাল) দিয়েই বেশির ভাগ জেলেদের মাছ শিকার করতে দেখা গেছে এই অঞ্চলে।
জনশ্রুতি আছে প্রভাবশালী না হলে মাছ শিকার ও এর ব্যবসা আপনার জন্যে নয়। কথা হয় ৫শ থেকে ৬শ হাত লম্বা একটি কোনা জাল নদীতে ফেলে মাঝ নদীতে ট্রলার নিয়ে জালের এক মাথা ধরে বসে থাকা জেলে ফরিদ খানের সাথে তার দাবী নদীতে তুলনামূ নদীতে আসতে হয়, শিকার করতে হয় মাছ। অভয়াশ্রমে নদীতে মাছ শিকার করলে প্রশাসন কিছু বলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন আমাদের ট্রলারে পতাকা টানিয়ে রাখা আছে, দুর থেকে পতাকা দেখে চলে যায় মাঝেমধ্যে কাছে আসলে খালেক মাঝী’র নাম বললে তারা চলে যান। বড় কোনো অভিযানের সম্ভাবনা থাকলে আমরা আগে জাyymu
স্থানীয় ত্রিশ আবুপুর নামক স্থানে দিনদুপুরে মাছ কেনাবেচার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই, সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে পায়ের জুতা ও হাতের মোবাইল ফেলে রেখেই চলে যান কেউ কেউ। কথা হয় ঘটনাস্থলে থাকা নিজেকে চায়ের দোকানদার পরিচয় দেওয়া বাবলু সরদারের সাথে তার দাবী আধাঘন্টা আগেই মাছ বেচাকেনা করে পাইকাররা চলে গেছে, পরে থাকা একাধিক মোবাইল ফোন ও জুতার কোন সঠিক ব্যাখ্যা তিনি দেননি। তবে আড়ৎটি বাদল গাজী নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।
যার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি যেকোনো সরকারের সমই এই নদীর রাজা, তার রয়েছে বিশাল ক্যাডার বাহিনী। যা দিয়ে তিনি নিজেই নিজের মতো করেন এই নদী শাসন।
বাদল গাজী সম্পর্কে স্থানীয় বাসিন্দা আলম মোল্লার দাবী বাদল গাজী দীর্ঘ আওয়ামী সরকারের সময়ও বীরদর্পে নদীতে বৈধ অবৈধ সব ধরনের ব্যবসা করেছেন, তার বাড়ী শরিয়তপুর জেলায় হলেও তিনি বরিশালের হিজলা উপজেলায় এক যুবদল নেতার পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাপক ক্ষমতা ও আধিপত্য দিয়ে বর্তমান সময়ে ব্যবসা আরো বিস্তৃত করেছেন, বর্তমানে এই উপজেলাতেই রয়েছে তার ৪ টি মাছের আড়, যেখানে অভয়াশ্রমের মধ্যেই চলে নির্বিঘ্নে মাছ বেচাকেনা।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে রাতের আধারে অবৈধ ভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন সহ নৌ পথে অবৈধ চোরাচালানের সাথে জড়িত থাকার। এসব বিষয়ে বাদল গাজীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার বাড়ী শরিয়তপুর এটা সত্য, আমার মাছ ঘাট বন্ধ, আমি বালু উত্তোলন ও চোরাচালানের সাথে জড়িত নই।
তবে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের সময়ে চোরাচালানের মাধ্যমে এক ব্যবসায়ীর নিকট বিক্রি করা মাছের টাকা এখনো পান’নি বলে স্বীকার করেছেন।
এবিষয়ে হিজলা নৌ পুলিশ এর ইনচার্জ জনাব ওয়াহিদুজ্জামান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা কোন পতাকা দেখিনা, আমরা দেখি কেউ মাছ শিকার ও কেনা বেচা করছে কি না, যদি দেখি এসব কেউ করছে তবে তাদের গ্রেপ্তার করি।
এবিষয়ে বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোস বলেন ওই এলাকাটি সম্পর্কে দায়িত্বরত হিজলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জনাব আলম সাহেবের সাথে কথা হয়েছে, যায়গাটি একটু ভীতিকর খুব শিগগিরই সেখানে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হবে।